বাংলাদেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদেও নারীর এই সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। এখানে সমানাধিকার বলতে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে অর্থাৎ জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের কথা বোঝানো হচ্ছে। শুধু ভোট প্রদান বা নির্বাচনে দাঁড়াবার সুযোগের বেলায়ই পুরুষ ও নারী যে সমান তা নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা, চাকরি বা কর্মসংস্থান, বেতন বা মজুরি সব ব্যাপারেই নারী ও পুরুষ সমান সুযোগ লাভের অধিকারী। কোনো অবস্থায়ই নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য করা যাবে না।
নারীর প্রতি বৈষম্য দূর ও তার সমানাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার কতগুলো বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন-উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ ও তাদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা। সন্তানের পরিচয় নির্ধারণে পূর্বে যেখানে শুধু বাবার নাম লেখার নিয়ম ছিল, বর্তমানে সেখানে মায়ের নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নারী নির্যাতন ও অ্যাসিড সন্ত্রাস রোধে সরকার কঠোর আইন প্রবর্তন করেছে। কর্মস্থলে নারীর মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বাড়িয়ে ৬ মাস করা হয়েছে। এসব ব্যবস্থার কিছু ফল নারীরা পেতে শুরু করেছে। তবে সমাজে শিক্ষার বিস্তার ও সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়া অবস্থার পুরোপুরি পরিবর্তন হয়তো ঘটবে না। কিন্তু বাংলাদেশের নারীরা যে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে সেটা স্পষ্ট। বিভিন্ন সভা-সমিতি-সংগঠনে তাদের অংশগ্রহণই তার বড়ো প্রমাণ।
কাজ- ১: আমাদের সমাজে নারীর অধিকার অর্জনের পথে প্রধান বাধাগুলো চিহ্নিত কর। কাজ-২: নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও তাদের অবস্থার উন্নয়নে সরকারের গ্রহণ করা কয়েকটি পদক্ষেপের উল্লেখ কর। |
common.read_more